গোয়েন্দা পিনাকীর এই ভেবে ভালো লাগলো যে অপরাধের অনুসন্ধান এ পরিবারের সকলের সুখী হওয়ার সম্মান নিয়ে এসেছে। এক সুযোগে চামেলী আর প্রণতিকে একসঙ্গে পেয়ে ওদের পিছন ফিরে দাঁড়াতে ব’ললো পিনাকী – দুজনের পিঠেই আজানুলম্বিত নীল চুলের বাহার; কে কোনজন তা বোঝা দুঃসাধ্য। ওদের মধ্যে একজন অতর্কিতে পিনাকীর হাত ধরে ব’ললো, ‘বাবা-মা একমাসের জন্যে কাশ্মীর বেড়াতে যাচ্ছে। প্লীজ কিছুদিন আমাদের বাড়ীতে কাটাও; আমরা গোয়েন্দাগিরি ক’রবো পরস্পরের উপর।‘
পিনাকী ভাবলো, প্রণতিকে কাছে পেয়ে সুখী হ’তে হ’লে শুধু গোয়েন্দাগিরি ক’রলে চলবে না। ভালবাসতে হ’লে চাই প্রণতির উপর অন্ধ বিশ্বাস; বিয়ের সংস্কারগুলো বড় ক’রে দেখলে পিনাকী কোনদিন সুখী হ’তে পারবে না। পিনাকী জানে, প্রণতির ছোটবেলায় হয়তো পিনাকীই ছিল একমাত্র পুরুষ – ভালবাসার মানুষ; কিন্তু এখন স্বপনও অনেকটা জায়গা ক’রে নিয়েছে প্রণতির দেহে, আর মনে। হয়তো স্বপন বা পিনাকী কাউকেই বাদ দেওয়া যাবে না প্রণতির জীবন থেকে। পিনাকী ভুলতে পারেনি কিভাবে প্রণতি এসেছিল ওর জীবনে।
***
চার জোড়া চোখ প্রণতির মুখ চোখের অভিব্যাক্তি খুঁটিয়ে দেখলো ও ঘরের চারপাশে খুঁজলো। সেখানে কিছুই নেই যার থেকে ধারণা করা যায় যে পিনাকী সেখানে ছিল। আশাহত হয়ে এই ইন্সপেক্টরেরা চলে যাবার উপক্রম ক’রছে এই সময়ে একটা শব্দ পাওয়া গেলো। কেউ একজন এই বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে সামনের রাস্তায় পড়েছে। প্রণতি বুঝতে পারলো যে, সে পিনাকী। প্রণতি কিছু করার আগেই ওই ইন্সপেক্টরদের দুজন দৌড়ে বার হয়ে গুলি ছুঁড়লো। একটা গুলি পিনাকীর কানের পাশ দিয়ে বার হয়ে গেলো, আর একটা গুলি ডানদিকের ঘাড়ের ঠিক তলায় লাগলো, খুব রক্ত বেরোতে লাগলো। দুজন ইন্সপ্পেক্টর ওকে ধ’রে ফেললো ও টেনে নিজেদের পুলিসভ্যানের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলো।