বইটির নাম ‘লাইভস্ ম্যাটার’, এখন পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ মন-প্রাণ দিয়ে জানে, , হাড়ে হাড়ে টের পায় Black Lives Matter – অন্য কোনো ভাষায় এর অনুবাদ করা নিস্প্রয়োজন।
এ প্রতিবাদ, এ শ্লোগান মূলতঃ কালো মানুষদের উপর জোর ক’রে চাপিয়ে দেওয়া নিয়মগুলোর প্রতিবাদ, সে অন্যায় নিয়মগুলো ভাঙার জন্যে মারণাত্মক শাস্তি দেওয়ার প্রতিবাদ, নিয়ম না ভাঙলেও জোর ক’রে নিয়ম ভাঙার স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্যে যে অত্যাচার তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সন্দেহভাজনের ঘাড়ে হাঁটুর চাপ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ ক’রে মারার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। প্রতিবাদের মূল কারণ সাদা ও কালোর মধ্যে মানুষের আঁকা সীমারেখা এবং এই সীমারেখার দুপাশের মানুষদের অসমান অধিকার ও দায়িত্ব পালনের নিয়ম, অসমান শাস্তি - অধিকারের অপপ্রয়োগের, অসমান শাস্তি - দায়িত্ব পালনে গাফিলতির।
যখন সারা পৃথিবী সোচ্চার সীমারেখার দুপাশের মানুষদের মধ্যে অসমান সুবিধা ও শাস্তির বিরুদ্ধে, তখন দেখা দরকার শুধু কালো-সাদার মধ্যে সীমারেখা নয়, আরও কত রকম সীমারেখা মানুষের জীবনে,- ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, বিবাহিত-অবিবাহিত, দেশি-বিদেশি, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, জাত-পাত, তারুণ্য-বার্ধক্য...। প্রতিটি সীমারেখার দুপাশের মানুষদের সমান সুযোগ সুবিধা চাই – বাঁচার জন্যে, থাকা-খাওয়া পরার জন্যে, জীবনকে উপভোগ করার জন্যে। শুধুমাত্র Black Lives Matter নয়, Every Life Matters.
‘লাইভস্ ম্যাটার’ উপন্যাসের শুরুতে, জীবনযুদ্ধে ক্লান্ত কিরীটি পালাতে চায় তার বাড়ী থেকে; কিরীটির ধারণা – এ বাড়ী নয় - এক কারাগার। এই কারাগারে কয়েদ হবার পর পঞ্চাশ বছর হ’তে চলেছে – সুভদ্রার সঙ্গে ওর পঞ্চাশতম বিবাহবার্ষিকীর আর মাত্র কয়েকদিন বাকী - প্রথামতো এটা উদযাপন করার দিন – তার মানে ভালবাসার অভিনয় ক’রতে হবে কেবল লোক দেখানোর জন্যে।